Home
 
কলারোয়ার দেয়াড়া আল জামে: মোহা: দাখিল মাদ্রাসা
জাল সার্টিফিকেটে সহকারি শিক্ষক

আজকের কলারোয়া - 21/02/2017
কলারোয়ায় সার্টিফিকেট জালিয়াতি করে চাকুরী ও সরকারি বেতন উত্তোলন করার অভিযোগে আবুল কালাম আজাদ (৩৮) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের চাকুরি বাতিলের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসী। সার্টিফিকেট জালিয়াতিকারী শিক্ষকের হলেন, উপজেলার দেয়াড়া আল জামে: মোহা: দাখিল মাদ্রাসার ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি দেয়াড়া গ্রামের রওশন আলী খানের ছেলে । কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগে জানাগেছে, গত ২৯/০১/২০১৩ ইং তারিখে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দেয়াড়া আল জামে: মোহা: দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) বিষয়ে নিয়োগ পান। পরে এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে কতৃপক্ষ তার সনদ পত্র যাচাইকালে সরকারের নিষিদ্ধ বেসরকারি দারুল ইহসান বিশ্ব বিদ্যালয়ের সাটিফিকেট দেয়ায় তার নিয়োগ বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে প্রভাবশালী আবুল কালাম আজাদ নিয়োগ বাতিলের এক বছর তিন মাসের মধ্যে জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয়ের অর্নাস, মাষ্টার্স ও বিএড পরীক্ষার সার্টিফিকেট জাল করে ২৭-০৪-২০১৪ ইং সালে কোন বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই গোপন তাকে নিয়োগ প্রদান করেন। তার এই নিয়োগের জন্য কলারোয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ মোটা অংকের টাকা নিয়ে এই কাজ করেছে বলে দাবি করা হয়। অভিযোগে বলা হয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে দাপটের সাথে মাদরাসায় শিক্ষকতা শুরু করে। অন্য শিক্ষকরা হয়রানীর ভয়ে তার বিরুদ্ধে এ বিষয়ে কোন অভিযোগ করেন নি বলে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে উক্ত শিক্ষকের সার্টিফিকেট জালিয়াতি ও অবৈধ্য পথে সরকারের বেতন উত্তোলন করার জন্য তার সার্টিফিকেট তদন্ত পূর্বক চাকুরী বাতিল এবং দৃষ্ঠান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। সরজমিনে খোজ নিয়ে জানাগেছে, মাদ্রাসায় সহকারি শিক্ষক (ইংরেজি) আবুল কালাম আজাদ টাকা দিয়ে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট ক্রয় করেন। পরে তিনি ঐ সার্টিফিকেট দিয়ে মাদরাসার সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ লাভ করেন। পরে উক্ত নিয়োগ বাতিল হওয়ার এক বছর তিন মাস পর কৌশলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চাদপুর জেলার চাদপুর কলেজ থেকে ২০০৬ সালে অর্নাস (ইংরেজি) ও ২০০৮ সালে মাষ্টার্স (বাংলা) বিষয়ের দ্বিতীয় শ্রেণী পেয়ে উর্ত্তিন হওয়ার সার্টিফিকেট এবং ২০১১ সালে সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, যশোর থেকে প্রথম শ্রেণীতে বিএড পরীক্ষায় উর্ত্তীনের সাটিফিকেট জালিয়াতির মাধ্যমে ম্যানেজ করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ মাদ্রাসা কতৃপক্ষকে অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে দ্বিতীয় বার নিয়োগ পান। পরবর্তীতের তিনি মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক হিসেবে ইংরেজি বিষয়ে যোগদান করেন। এবং সরকারি সরকারের দেয়া বেতন উত্তোলন করে আসছেন। সরজমিনে মাদ্রাসায় যেয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের কোন ব্যক্তিগত ফাইল পাওয়া যায়নি। তবে কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তার ফাইল কাউকে দেখানো হয় না। তারা আরো বলেন, এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ স্যার সব কিছুই জানেন। কিন্তু টাকার কাছে সব ফাইল চাপা পড়ে আছে। শিক্ষকরা মাদ্রাসায় আরো অনেক দূর্নীতি, অনিয়ম হচ্ছে বলে জানান। তবে এসব বিষয়ে ভয়ে তারা কিছুই বলতে রাজি হয়নি। জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয়ের আওতাভুক্ত সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, যশোর এ যোগাযোগ করা হলে কলেজের অধ্যক্ষ বিভিন্ন ফাইল বের করে দেখে জানান, ২০১১ শিক্ষা বর্ষে কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়া গ্রামের মো: আবুল কালাম আজাদ, পিতা- রওশন আলী খান, মাতা-মোছা: মরিয়ম খাতুন। এই নামে কোন শিক্ষার্থী আমাদের কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন বা পড়েননি এই মর্মে একটি প্রত্যায়ন পত্র নিজ স্বাক্ষর করে প্রত্যায়ন পত্র দিয়েছেন। এ ঘটনার পর তার সার্টিফিকেট জালিয়াতীর ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। সার্টিফিকেট জালিয়াতির অভিযুক্ত শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের (০১৭২৫-২৬৮০৮৩) সাথে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অনার্স পাশ করেছি। মাষ্টার্স পরীক্ষা দেয়নি। তবে বিএড পরীক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য না করে ক্লাস আছে বলে মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করেন। শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বিকালে ফোন করে এ প্রতিবেদকে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য হুমকি প্রদান করেন। এ বিষয়ে দেয়াড়া আল জামে: মোহা: দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা হযরত আলী (০১৭০৯৯০৮৮৬৫) জানান, সহকারি শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের নিয়োগের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তিনি বলেন, তার নিয়োগের সময় মাদরাসার সুপার ছিলেন মাওলানা আব্দুল বারী। বর্তমানে তিনি মারা গেছেন। তবে তৎকালীন সময়ে সহ-সুপার পদে তিনি দায়িত্ব পালন করলেও নিয়োগ বোর্ডে কারা ছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কয়েক বছর আগে তার নিয়োগ হয়েছিলো এখন সেসব না মনে নেই তবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ স্যার ছিলেন, এ বিষয়ে স্যার ভালো বলতে পারবেন। এ সময় অভিযুক্ত শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের ব্যক্তিগত ফাইল দেখতে চাইলে তিনি বলেন, তার ব্যক্তিগত ফাইল মাদ্রাসায় নেই। শিক্ষক আজাদ তার কাছে রেখে দিয়েছে। তিনি বলেন, আমি ২/৩ দিনের মধ্যে তার ব্যক্তিগত ফাইল মাদ্রাসায় নিয়ে আসার জন্য বলবো। বর্তমানে মাদরাসা পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগে তদন্তাধীন থাকায় কমিটির সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে নিয়োগ প্রদানের সময় মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফজলুল হক জানান, আমি বর্তমানে মাদরাসার কোন কর্মকান্ডে জড়িত নেই। এসব বিষয় নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে পারবো না। কলারোয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হামিদের সাথে এ বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। এমনকি তিনি কোন তথ্য দিতে বাধ্য নন বলে জানান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায় জানান, দেয়াড়া আল জামে: মোহা: দাখিল মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক মো: আবুল কালাম আজাদের সার্টিফিকেট জালিয়াতীর অভিযোগে দেয়াড়া ইউনিয়নের মো: আব্দুল ওয়াজেদ আলী খান এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, অভিযেগের সাথে আবুল কালাম আজাদের সাটিফিকের ফটোকপি এবং সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, যশোর এর অধ্যক্ষ ন্বাক্ষরিত একটি প্রত্যায়ন পত্র জমা দিয়েছে। তিনি জানান, এ বিষয়টি আমি তদন্ত কাজ শুরু করেছি। সার্টিফিকেট জাল প্রমানিত হলে উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।


 



গন্তব্য কলারোয়া    
Product Image Product Image


 
    
Copyright : Kalaroa.com, 2019
Email : info@kalaroa.com