|
সরসকাটি পুলিশ ফাড়ির এস আই সিরাজের বিরুদ্ধে মহা পুলিশ পরির্দশকসহ তিন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ
আজকের কলারোয়া -
24/04/2017
মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান, গ্রেপ্তার বানিজ্য ও লাগামহীন ঘূষ গ্রহনের অভিযোগ এনে পুলিশের এক উপ-পরিদর্শকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার কলারোয়া উপজেলার সরসকাটি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দায়ের করা হয়।
তিন জন মুক্তিযোদ্ধা দুই জন ইউপি চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সম্পাদকসহ যুগীখালী ও জয়নগর ইউনিয়নের ২৫ জন সম্মানিত ব্যক্তি এ অভিযোগ পত্রে নিজ নিজ মোবাইল নাম্বার উল্লেখ করে স্বাক্ষর করেছেন। দায়ের করা তিনটি অভিযোগ মহা পুলিশ পরিদর্শক ঢাকা, জিআইজি খুলনা ও পুলিশ সুপার সাতক্ষীরাকে পৃথকভাবে রোজিষ্ট্রিা ডাকযোগে প্রেরণ করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগ মতে জানা গেছে, সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার সরসকাটি পুলিশ ফাঁড়ির এস আই সিরাজুল ইসলাম যোগদানের পর থেকে সাধারণ মানুষকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করে আসছেন। তিনি সাদা পোশাকে রাত দিন জয়নগর ও যুগীখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষের মনে আতংক সৃষ্টি করেন। সময় সুযোগ বুঝে সাধারণ মানুষকে ধরে ক্যাম্পে ধরে নিয়ে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন। জামায়াত শিবিরের নেতা কর্মীদের গ্রেপ্তার করার নামে আওয়ামীলীগ কর্মীদেরও আটক করে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন তিনি। তার এসব কর্মকান্ডে এলাকার মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। পুলিশ আতংকে এলাকার অনেক পাড়া ও মহল্যা পুরুষ শুন্য হয়ে পড়েছে। এছাড়া এস আই সিরাজুল ইসলাম এলাকার ভ্যান ও নছিমন চালকদের নিকট থেকে প্রতি মাসে মাথা পিছু ২২০ টাকা করে জোর পূর্বক আদায় করে থাকেন। তিনি সরসকাটি ব্রিজের দক্ষিনপ্রান্তে বসে মাদক ব্যবসায়ীদের মাসিক টোকেন দিয়ে চোরাচালানে সহায়তা করে আসছেন।
এস আই সিরাজুল ইসলাম সহিংসতা মামলায় এলাকার পালাতক জামায়াত শিবিরের নেতা কর্মীদের বাড়িতে যেয়ে মাল ক্রোকের কোর্ট অর্ডার আছে এমন কথা বলে মোটা অংকের টাকা নিয়ে আদালতের নির্দেশ পালন করেন না।
এলাকার কোন মানুষ গরু বিক্রি করলে, গাছ বিক্রি করলে, জমি কিনলে, পাকা বাড়ি করার জন্য রড ও ইট কিনলে, ঘেরের মাছ বিক্রি করলে সে সব বাড়িতে যেয়ে হানা দিয়ে টাকা না দিলে সহিংসতা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠানোর ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়ে থাকেন।
এছাড়া এলাকার সে সব যুবকরা বিদেশে থাকেন অকারনে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তাদের ঘরবাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে বাড়ির যুব মহিলাদের সাথে অপ্রাসঙ্গিক আলোচনা করে থাকেন।
এছাড়া তিনি এলাকায় যে কোন ধরনে সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি হলে গায়ে পড়ে এক পক্ষকে কু-পরামর্শ দিয়ে লিখিত দরখাস্ত নিয়ে অপরপক্ষকে পিট মোড়া দিয়ে বেঁধে ক্যাম্পের হাজত খানায় আটক রাখেন। পরে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেন। তিনি আইন না মেনে একের পর এক মানবাধিকার লঙ্ঘন করে আসছেন।
সাতক্ষীরার এসপি ও খুলনা রেঞ্জের ডিআইজিকে প্রতি মাসে বড় অংকের টাকা ঘুষ দিতে হয় বলে এলাকার মানুষের নিকট থেকে তিনি অবৈধ উপায়ে এসব অর্থবানিজ্য করেন বলে প্রকাশ্যে বলে থাকেন।
এছাড়া তিনি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, সামাজিক ও বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নানা ভাবে হয়রানী ও অসম্মান করে থাকেন। সরকারের নানা কর্মকান্ড নিয়ে লোক সমাজে নেতী বাচক মন্তব্যও করে থাকেন।
তিনি পুলিশ ক্যাম্পে যোগদানে পর থেকে মানবধিকার লঙ্ঘন, মানুষকে ভয় দেখিয়ে অর্থ-বানিজ্যসহ নানাবিধ অপরাধ করে আসছেন,এসব নিয়ে একাধিক পত্র পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে।
সর্বশেষ এস আই সিরাজের বিরুদ্ধে গত ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসের নয় তারিখে ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক ‘সংবাদ,-এর সাত নম্বর পাতায় একটি অনুসন্ধানী সংবাদও প্রকাশিত হয়।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সরসকাটি পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এস আই) সিরাজুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, বিএনপি জামায়াতের লোকজনই এসব প্রচার করে তার ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করছে। তদন্ত হলে সত্য উদঘটন হবে।
প্রসঙ্গত; এলাকার যেসব সাধারন মানুষকে জিম্মি করে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে জোর পূর্বক অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন তাদের নাম ঠিকানাও লিখিত ওই আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন, সহিদুল সরদার, সবুজ হোসেন, নাজমা খাতুন, ইশারুল ইসলাম, মফেজ মোল্যা, সহিদুল মোড়ল লুৎফর মোল্যা, আবুল হোসেন, আব্দুল্লাহ, আব্দুস ছামাদ ওরফে টলি ছামাদ,বাবুল কম্পিউটার,হারুন, লুৎফর মোড়ল, সুমন, রাশিদুল সানা, ও যুগীখালী, কামারালী, তরুলীয়া, তালুন্দিয়া, বামনআলী, রাজনগর, আগুনপুর, বামনখালী গ্রামের শতাধিক ব্যক্তির নিকট থেকে ২২ লক্ষাধিক টাকা ক্রস ফায়ারের ভয় দেথিয়ে ও পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকতার নামে মানুষকে ভয় দেখিয়ে গ্রহন করেছেন।
|