|
ধানদিয়া ইউনিয়ন ইন্সটিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কলারোয়ায় প্রধান শিক্ষক নিয়োগে ২০লাখ টাকা চুক্তি
আজকের কলারোয়া -
05/03/2018
কলারোয়ায় ধানদিয়া ইউনিয়ন ইন্সটিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান পদে নিয়োগ প্রদানে ২০ লাখ টাকা অর্থ বানিজ্যের অভিযোগে সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট নিয়োগ বন্ধে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। গত রোববার বিকালে উপজেলার খোর্দ্দ-বাটরা গ্রামের মৃত, খোশাল গাজীর ছেলে মো: হাবিবুর রহমান (প্রধান শিক্ষক পদে আবেদনকারী) স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষে এ অভিযোগ করেন।
লিখিত অভিযোগে তিনি, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় জয়নগর ইউপি চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন আল মাসুদ ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে বিদ্যালয়ের শুন্য পদে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রদানের চেষ্টার অভিযোগ করা হয়েছে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগে জানাগেছে, উপজেলার ধানদিয়া ইউনিয়ন ইন্সটিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মো: ফজলুর রহমান অবসরে যাওয়ার পর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শুন্যপদে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রদানে পত্রিকায় (নভেম্বর’ ২০১৭) বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। সে অনুযায়ী একই বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক উপজেলার ধানদিয়া গ্রামের ধীরেন্দ্র নাথের ছেলে বিকাশ চন্দ্রসহ ১০ জন যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থী আবেদন করেন। কিন্তু পরিচালনা কমিটির সভাপতি, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও আ.লীগ নেতা সামছুদ্দীন আল মাসুদ কৌশলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে ম্যানেজ করে তার আবেদন প্রত্যাহার করান এবং দুইজনে যোগসোযগে উপজেলার নীলকন্ঠপুর গ্রামের আব্দুল সাত্তার মোড়লের ছেলে যশোর জেলার গোবিন্দপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো: আব্দুল আজিজের (প্রধান শিক্ষক পদে আবেদনকারী) নিকট থেকে ২০ লাখ টাকার চুক্তিতে নিয়োগ প্রদানে আশ্বাস দেন এবং অগ্রিম ৯ লাখ টাকা অগ্রিম গ্রহন করেছেন বলে তিনি জানান।
লিখিত অভিযোগে তিনি আরো জানান, নিয়োগ বোর্ড গঠনের আগেই পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবেদনকারী প্রার্থীসহ স্থানীয়দের জানিয়েছেন মো: আব্দুল আজিজ বিদ্যালয়ের নতুন প্রধান শিক্ষক হচ্ছেন ! তিনি দাবি করে বলেন, নিয়োগ বোর্ড গঠনের আগেই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সহকারি প্রধান শিক্ষক কিভাবে জানতে পারলেন আব্দুল আজিজ প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন ? এছাড়া তাদের এ ধরনের মন্তব্যে পরিচালনা কমিটির একাধিক সদস্যসহ এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি এলাকার শিক্ষার মান উন্নয়নে, বিদ্যালয়ের সুনাম ও সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন।
তিনি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট অর্থ বানিজ্যের মাধ্যমে শুন্য পদে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রদানের চেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন এবং নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষতার সহিত একজন যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ প্রদানে হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কিছুই জানি না। আপনারা সভাপতির নিকট যোগাযোগ করেন। তবে তার আবেদন প্রত্যাহার করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মো: ইউনুস আলী ও ডা. ইবাদুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ে কে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পাবে সেটি সভাপতি সাহেব বলতে পারবেন। তারা জানান, পরিচালনা কমিটিতে সভাপতির সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত। তবে তারা এলাকার শিক্ষার মান উন্নয়নে যোগ্য প্রধান শিক্ষকের প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন।
উপজেলার ধানদিয়া ইউনিয়ন ইন্সটিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জয়নগর ইউপি চেয়ারম্যান সামছুদ্দীন আল মাসুদ অর্থ বানিজ্যের বিষয়ে অস্বীকার করে জানান, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ১০ জন প্রার্থী আবেদন করেছেন। নিয়োগ বোর্ড যোগ্য প্রার্থীকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পদে নিয়োগ প্রদান করবেন। তবে আব্দুল আজিজ একজন যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষক বলে শুনেছি। তিনি মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ঐতিয্যবাহী বিদ্যালয়টি ধংসের চেষ্টায় লিপ্ত না হওয়ার অনুরোধ জানান।
কলারোয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ জানান, এ বিষয়ে আমার কিছুই জানানেই। এছাড়া আমার নিকট কেউ অভিযোগ করেনি।
সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কলারোয়া উপজেলার ধানদিয়া ইউনিয়ন ইন্সটিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অর্থ বানিজ্য হচ্ছে এমন অভিযোগে খোরর্দ্দ-বাটরা গ্রামের হাবিবুর রহমান নামে এক প্রার্থী স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
|